যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন স্পাইক ঘোষণা দিয়েছে, তারা বাণিজ্যিকভাবে চাঁদে মানুষকে বেড়াতে নিয়ে যাবে। চলতি দশকের শেষ নাগাদ তারা চাঁদে মানুষ পাঠাতে পারবে বলে আশা করছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাবেক দুই কর্মকর্তার প্রতিষ্ঠান এই গোল্ডেন স্পাইক। চাঁদের মাটিতে এ পর্যন্ত পা রাখার সৌভাগ্য হয়েছে মোট ১২ জনের। তাঁরা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাঁদের মধ্যে নিল আর্মস্ট্রং নাসার অ্যাপোলো-১১ অভিযানে অংশ নিয়ে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদের মাটি স্পর্শ করেন। ১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই তাঁর সঙ্গে দ্বিতীয় মানুষ হিসেবে চাঁদে পা রাখেন এডুইন অলড্রিন। স্নায়ুযুদ্ধের সময় পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে চাঁদের মাটি স্পর্শ করার নাসার ওই সাফল্য যুক্তরাষ্ট্রকে মহাকাশ অভিযানের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দিয়েছিল অনেক।
এরপর অ্যাপোলা-১২, ১৪, ১৫, ১৬ ও ১৭ অভিযানে অংশ নেওয়া আরও ১০ জন নভোচারী চাঁদের মাটিতে পা রাখেন। সর্বশেষ ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে মানুষ নিয়ে চাঁদে যায় অ্যাপোলো-১৭ অভিযানের নভোযান। ১১ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাঁদে ছিলেন ইউজিন সারনান ও হ্যারিসন শামিত। এরপর নাসা চাঁদে আরও অনেকগুলো অভিযান চালালেও মানুষ আর পাঠায়নি। খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় চাঁদে অভিযান এমনকি মহাকাশে মনুষ্যবাহী নভোযান পাঠানো গত বছর বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এর আগেই চাঁদে আবার মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল নাসা। ওই পরিকল্পনা বাতিল করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ আরও অনেক আগেই চাঁদে গেছে।
তবে বেসরকারিভাবে চাঁদে ও মহাকাশে মানুষ পাঠোনোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে অনেক কোম্পানি। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার গোল্ডেন স্পাইক ঘোষণা দিল, চলতি দশকের শেষ নাগাদ তারা চাঁদে মানুষ পাঠাবে। এ জন্য রকেট ও ক্যাপসুল প্রযুক্তি ব্যবহার করবে তারা। আসন থাকবে দুটি। এতে খরচ পড়তে পারে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে খরচ আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করবে কোম্পানিটি।
গোল্ডেন স্পাইকের অন্যতম কর্তাব্যক্তি নাসার সাবেক সহকারী প্রশাসক অ্যালেন স্টার্ন জানিয়েছেন, গবেষণা কিংবা দেশের জাতীয় গৌরবের স্বার্থে যেসব দেশ চাঁদে মানুষ পাঠাতে চাইবে, যেমন—দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান—সেসব দেশকে প্রস্তাব দেওয়ার চিন্তা করছেন তাঁরা।
অ্যালেন স্টার্ন জানান, এখন আর এটা প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার বিষয় নয়; চাঁদে মানুষ পাঠানোর দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়ার বিষয়। তিনি বলেন, ‘নাসা গত শতকের ষাটের দশকে যা করছে, আমরা এখন সেটাই করার চেষ্টা করব। ২০২০ সাল নাগাদ এটাই হবে একটি ব্যবসা।’ prothom-alo
0 comments:
Post a Comment