পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনার তরমুজচাষিরা গ্রীষ্মের এ জনপ্রিয় ফলের চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন। এ এলাকায় এবার তরমুজের ফলন হয়েছে খুব ভালো। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১৫ বছর ধরে ব্যাপক হারে তরমুজের চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার চাষি সাত হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। উৎপাদিত হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন তরমুজ।
গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের সদাই গ্রামের চাষি আবদুল জলিল জানান, তিনি এ বছর পাঁচ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। এতে তাঁর দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি খেতের সব তরমুজ বিক্রি করে সাড়ে চার লাখ টাকা হাতে পেয়েছেন।
তরমুজচাষিদের মতে, ভালো যোগাযোগব্যবস্থা এবং সময়মতো বাজারজাত করতে পারলে তরমুজ চাষ বেশ লাভজনক। প্রায় ১৫ বছর আগে গলাচিপা উপজেলায় যাঁরা তরমুজ চাষ শুরু করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম গোলখালী ইউনিয়নের নলুয়াবাগী গ্রামের চাষি সানু শরীফ। তাঁর সাফল্য অন্যদের উৎসাহিত করেছে তরমুজ চাষে। ফলে এলাকায় তাঁর নামই হয়ে গেছে ‘তরমুজ-শরীফ’। তিনি বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ধরে তরমুজ নিয়েই আছি। এ বছর চার একর জমিতে তরমুজ চাষ করছি। কিন্তু রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় আমি তরমুজ সময়মতো বাজারে পাঠাতে পারি নাই। তাই আমার খুব একটা লাভ হয় নাই। তবে এলাকার শত শত চাষির ভাগ্য বদলে গেছে তরমুজ চাষ করে।’
রাঙ্গাবালীর ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চাষি মো. সুজন বলেন, ‘সময়মতো তরমুজ বাজারে পাঠাতে পারলে আর লোকসান হয় না। আমি এই বছর দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করে এক লাখ টাকার বেশি লাভ করেছি।’
গলাচিপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফজলুল হক জানান, চাষিরা যদি আগেভাগেই তরমুজ চাষের কাজ শুরু করেন, তবে লোকসান হওয়ার আশঙ্কা কম। নভেম্বর মাস থেকে তরমুজ চাষের কাজ শুরু করতে হয়। বীজ বপনের পর ১১০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে পাকা তরমুজ তোলা সম্ভব। কম সময়ের মধ্যে ফসল তোলার সুযোগ থাকায় কৃষকদের জন্য তরমুজ চাষ খুব লাভজনক। তরমুজে রোগবালাইয়ের আক্রমণও কম। তরমুজ চাষের জন্য খেতে অতিরিক্ত চাষও দিতে হয় না। তবে চারা গজানোর পর থেকে ফল তোলা পর্যন্ত খেতে সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। উপকূলীয় এলাকায় তরমুজ চাষ করে অনেক চাষিই তাঁদের ভাগ্য ফিরিয়েছেন। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment