তালিকাটি যুবক কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে যুবক কমিশন। এতে বলা হয়েছে, আগের ফরাসউদ্দিন কমিশনের কাছে যুবকের গ্রাহকদের আবেদনের ভিত্তিতে তালিকাটি করা হয়েছে।
গ্রাহকেরা যুবক কমিশনের www.jubokcommission.com এই ওয়েবসাইটে তাঁদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন। যুবক হাউজিং অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট, যুব কর্মসংস্থান (উদ্যোগ), যুবক কর্মসংস্থান সোসাইটি, যুবক টেলিবার্তা, জে কে হ্যাচারি—এসব খাতে মানুষের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছিল যুবক। ওয়েবসাইটে নিজ জেলা ও যে খাতে গ্রাহক বিনিয়োগ করেছিলেন, সেই খাতের ঘরে ক্লিক করার পর গ্রাহক কোড নম্বর ব্যবহার করতে হবে। তারপর তথ্য পাওয়া যাবে।
যুবকের গ্রাহকদের অর্থ ফিরিয়ে দিতে এর আগে ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি ‘ড. ফরাসউদ্দিন কমিশন’ নামে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ওই কমিশনে যুবকের গ্রাহকেরা পাওনা অর্থ চেয়ে আবেদন করেন।
ফরাসউদ্দিন কমিশনের প্রতিবেদনে যুবকে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৩৩০ জন গ্রাহকের আবেদন অনুযায়ী দুই হাজার ১৪৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা দাবির কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটিতে সম্পত্তির পরিমাণ বাজারমূল্যে তিন হাজার কোটি টাকা বলে কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, যুবকের গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধে একটি স্থায়ী কমিশন গঠন করতে হবে এবং তার আগে যুবকের যাবতীয় সম্পত্তি থাকবে সরকারের জিম্মায়।
সেই সুপারিশ অনুযায়ী, ২০১১ সালের শুরুর দিকে দুই বছরের জন্য ‘যুবক কমিশন’ গঠন করা হয়, যার চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলামকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন এ কমিশন গ্রাহকদের পাওনা ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে।
২০০৫ সালে যুবকের ‘অবৈধ ব্যাংকিং’ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের ওপর ২০০৬ সালে একটি তদন্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে যুবকের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের আলামত পাওয়া যায়। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হোসাইন আল মাসুমসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হয় এক হাজারের বেশি মামলা।
যোগাযোগ করলে যুবক কমিশনের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ফরাসউদ্দিন তদন্ত কমিশনে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের আবেদনগুলোই এখন ব্যবহার-উপযোগী করা হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে শুধু খোঁজ নেওয়ার জন্য মানুষ কমিশনে আসতেন। তাঁদের অস্বস্তিও ছিল, নামধাম ঠিকমতো উঠল কি না। সেই কাজটি থেকে অন্তত তাঁদের রেহাই দেওয়া গেল।
মানুষ টাকা ফেরত পাবেন কবে থেকে—এমন প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াটিই এখন শুরু করতে হবে।’ prothom-alo
0 comments:
Post a Comment