ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের তাঁদের কৃতিত্বস্বরূপ যে স্বর্ণপদক দেওয়া হতো সেটি ইংল্যান্ড থেকে তৈরি করে আনা হতো। তাই মূল পদক পেতে কিছুটা সময় লাগত। ১৯৪৪ সালে ভালো ফলাফল নিয়ে স্নাতকোত্তর পাস করার পর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দীননাথকে একটি ডামি পদক দেওয়া হয়। এরপর দীর্ঘদিন থেকেই তিনি মূল পদকটির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু অপেক্ষার পালাটা যেন একটু বেশিই দীর্ঘায়িত হলো তাঁর জন্য।
১৯৪৭ সালের উপমহাদেশ বিভক্তি দীননাথের স্বর্ণপদক পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতার মূল কারণ। এই বিভক্তির কারণে লাহোর পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায় এবং সপরিবারে ভারতে ফিরে যান দীননাথ। একটা সময় তিনি ওই পদকের কথাও ভুলে যান। কয়েক বছর আগে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে ভারতের প্রকাশনা সংঘের এক বৈঠকে হঠাত্ই তিনি এ প্রসঙ্গ তোলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করেন। উপাচার্য দীননাথকে লাহোরে স্বর্ণপদক দিতে রাজিও হন। কিন্তু নিয়তির হয়তো অন্য ইচ্ছেই ছিল। মুম্বাই থেকে লাহোরে যাওয়ার জন্য তিনি যখন পুরোপুরি প্রস্তুত সে সময়ই ২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার কারণে তাঁর লাহোর ভ্রমণে ছেদ পড়ল। এরপর আবার অপেক্ষা। প্রায় চার বছর প্রতীক্ষার পর গতকাল দিল্লিতে দীননাথের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বপ্নের সেই পদক।
স্বর্ণপদক লাভ করার পর প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে দীননাথ জানান, এত দিন পরে হলেও অর্জিত পদকটি হাতে পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তবে, তাঁর যৌবনে কাটানো লাহোর শহরে ভ্রমণের দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেল বলে মনে করছেন তিনি। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment