প্রায় আধা মাইল দীর্ঘ একটি টেলিস্কোপ বসছে ভূমধ্যসাগরের ২ মাইল নীচে। মহাবিশ্বের গোপন তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে এ টেলিস্কোপ বসাচ্ছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের গবেষকরা। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইন-এর।
২১ কোটি পাউন্ড খরচ করে তৈরি করা এ টেলিস্কোপটি মহাশুন্য থেকে পৃথিবীতে আসা নিউট্রিনো কণা শনাক্ত করবে। এই কণা আমাদের পৃথিবীর মধ্যে দিয়ে সোজা চলে গেলেও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় না। কিন্তু গবেষকদের ধারণা, নতুন এ টেলিস্কোপ সে কণার সন্ধান পাবে এবং সুপারনোভা, বিগ ব্যাংসহ মহাবিশ্ব বিষয়ে নতুন তথ্য জানাবে।
গবেষকরা টেলিস্কোপটির নাম দিয়েছেন ‘মাল্টি-কিউবিক কিলোমিটার নিউট্রিনো টেলিস্কোপ বা সংক্ষেপে কেএম৩এনইটি।
ইউনিভার্সিটি অফ সেফিল্ড-এর গবেষক ড. লি থম্পসন জানিয়েছেন, ‘আমাদের মহাবিশ্বের জন্য নতুন জানালা উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে কেএম৩এনইটি। আমরা বিশ্ব সম্পর্কে যতোটুকু জানি তা বিভিন্ন তরঙ্গ বা দৃশ্যমান আলো এবং এক্সরে ব্যবহার করে দেখা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রশ্মির তথ্য। নিউট্রিনো ব্যবহার করে এ বিশ্বের তথ্য জানার এ পদ্ধতির পুরো বিষয়টিই এক নতুন ধারণা। তাই এটি নতুন কিছু আনতে যাচ্ছে।’
গবেষক ড. লি থম্পসন আরো জানিয়েছেন, ‘মহাবিশ্বে অনেক উৎস থেকেই নিউট্রিনো নির্গত হচ্ছে সেটা আমরা জানি, কিন্তু সেখান থেকে আরো এমন কিছু বের হচ্ছে যা বর্তমানে ব্যবহৃত টেলিস্কোপগুলো ধরতে পারছে না।’
কেএম৩এনইটি টেলিস্কোপের ছোটো প্রোটোটাইপ ফ্রান্সে বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ভূমধ্যসাগরের নীচে বসানো বিশাল আকারের টেলিস্কোপটি আগামী তিন বছরের মধ্যেই তথ্য দেয়া শুরু করবে। টেলিস্কোপটিতে বিচ বল আকারের ১২ হাজার সেন্সর লাগানো হয়েছে যা পানির নীচে এক ঘনমাইলের মধ্যে সাজানো থাকবে।
নিউট্রিনো হচ্ছে বৈদ্যুতিক চার্জবিহীন, দুর্বল সক্রিয় ক্ষুদ্র পারমাণবিক কণা। ধারণা করা হয়, এই ক্ষুদ্র কণা ভর শুন্য। এবং পর্দাথের মধ্য দিয়ে অবিকৃতভাবে চলাচল করতে পারে অর্থাৎ নিউট্রিনো অর্থ হচ্ছে 'ক্ষুদ্র নিরপেক্ষকণা'। সেপ্টেম্বর ২০১১-তে গবেষকরা ঘোষণা করেন, নিউট্রিনো আলোক কণা থেকে দ্রুতগতিসম্পন্ন।
নিউট্রিনো কোনো কিছুর সঙ্গে প্রতিক্রিয়া না দেখালেও কখনো কখনো ভারি পরমাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গবেষকরা পানির নীচে টেলিস্কোপ বসিয়ে নিউট্রিনোকে ধরার চেষ্টা করবেন। নিউট্রিনো কণার উৎস বের করে ডার্ক ম্যাটারসহ অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর বের করতে পারবেন বলেই গবেষকরা আশা করছেন।
বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম
0 comments:
Post a Comment