২০০৪ সালে স্টিভ জবস ঘোষণা দেন, তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত। পাঁচ বছর পর তাঁর যকৃত্ পুনঃস্থাপন করা হয়।
বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, স্যান্টা-ক্লারা কাউন্টি পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট গতকাল সোমবার এ সনদ প্রকাশ করে। সনদে স্টিভ জবসের পেশা হিসেবে ‘উচ্চপ্রযুক্তির উদ্যোক্তা’ উল্লেখ করা হয়েছে।
জবসের পরিবার থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জবসের মৃত্যুর সময় তাঁর পরিবার পাশে ছিল।
৫৬ বছর বয়সী স্টিভ ৫ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার প্যালো-অ্যাল্টোয় অবস্থিত নিজ বাড়িতে মারা যান। কোনো ময়নাতদন্ত ছাড়াই ৭ অক্টোবর তাঁর মরদেহ সমাহিত করা হয়।
অ্যাপলের সর্বশেষ পণ্য আইফোন-৪এস বাজারে আনার ঘোষণা দেওয়ার এক দিন পরেই স্টিভ জবস মারা যান। এদিকে, অ্যাপল জানিয়েছে আইফোন-৪এস বাজারে আসার আগেই ইতিমধ্যেই এটি কেনার জন্য প্রায় ১০ লাখেরও বেশি আবেদন পড়েছে। যা ২০১০ সালে আইফোন-৪ বুকিংয়ের রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
১৯৫৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সানফ্রান্সিসকোতে জবসের জন্ম। তাঁর বাবা সিরীয় বংশোদ্ভূত আবদুল ফাত্তাহ জান্দালি ও মা জোয়ান সিবিল। জন্মের পরই তাঁকে দত্তক দেওয়া হয়। সিলিকন ভ্যালির একটি দরিদ্র পরিবারে বড় হতে থাকেন তিনি। সেখানে ছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কারখানা। পরিবেশগত কারণেই প্রযুক্তি ও প্রকৌশলের নানা কারিকুরি আকৃষ্ট করে তাঁকে।
বড় হয়ে কলেজের পাট না চুকিয়েই ভারতে চলে গিয়েছিলেন জবস। সেখানে আধ্যাত্মিক পথ অনুসন্ধান শেষে ফিরে আসেন দেশে। ১৯৭৬ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে বন্ধু স্টিভ ওজনিয়াকের সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন কম্পিউটার নির্মাণের প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। প্রিয় ফলের নামানুসারে এ নামটিও তাঁরই দেওয়া। তারপরের ইতিহাস সবারই জানা—একের পর এক তাঁর উন্নতির সোপান উতরে যাওয়া।
অসুস্থতার কারণে স্টিভ জবস চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে ছিলেন। পরে অবশ্য স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান অ্যাপলে আবারও যোগ দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত গত আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। জবসের স্থলাভিষিক্ত হন তাঁরই দীর্ঘদিনের সহকর্মী টিম কুক। আর জবসকে নির্বাচিত করা হয় অ্যাপলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে।
প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে স্টিভ জবস নিজের অসুস্থতার কথাই উল্লেখ করেছিলেন। অ্যাপল বোর্ড বরাবর পাঠানো চিঠিতে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অ্যাপলের উজ্জ্বলতম ও উদ্ভাবনী সময় সামনেই। আমি ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি, যেখানে নতুন কোনো ভূমিকায় আমি এর সাফল্যে আবদান রাখতে পারব।’ চিঠিতে জবস তাঁর সব সহকর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছিলেন।
0 comments:
Post a Comment