বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দিনে অন্তত তিন ঘণ্টা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের হাঁটাচলা করানো অথবা শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখা উচিত। ভবিষ্যতের কথা ভেবে শিশুদের পেরামবুলেটর অথবা গাড়ির আসনে বসিয়ে রাখার সময় কমিয়ে আনতে হবে।
সরকারি এ পরামর্শের পর ব্রিটেনে যেসব শিশু যথেষ্ট পরিমাণে শরীরচর্চা করে না, তাদের বিষয়ে সরকারের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। শরীরচর্চা না করার ফলে এসব শিশুর স্থূলকায় ও মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের চিকিৎ সা কর্মকর্তারা যৌথভাবে এ পরামর্শ দিয়েছেন। শিশুদের শরীরচর্চার ব্যাপারে যুক্তরাজ্যব্যাপী পরামর্শ দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
সরকারের নতুন নির্দেশনায় জন্ম থেকেই শিশুদের হামাগুড়ি ও সাঁতার কাটার মতো শারীরিক কসরতে উৎ সাহিত করতে বলা হয়েছে। কেবল ঘুম ছাড়া পাঁচ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে যতটা কম পারা যায়, শুয়ে থাকতে অথবা বসে থাকতে কম সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিশুরা হাঁটতে শেখামাত্র দিনে তাদের কমপক্ষে তিন ঘণ্টা শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা ও চারদিকে ছোটাছুটি করার সুযোগ দিতে হবে।
ইংল্যান্ডে প্রধান চিকিৎ সা কর্মকর্তা ডেইম স্যালি ডেভিস বলেছেন, ছোট্ট শিশুকে শারীরিকভাবে সক্রিয় করতে তাদের উৎ সাহ দেওয়ার দায়িত্ব মা-বাবার। তিনি বলেন, ‘যেসব শিশু হাঁটতে শেখেনি তাদের মেঝেতে খেলতে, হামাগুড়ি দিতে অথবা চারদিকে ছোটাছুটি করতে দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’
স্যালি ডেভিস আরও বলেন, ‘যেসব খেলা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে, সেসব খেলা হয়তো ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু দিনে অন্তত তিন ঘণ্টা এটা করতে দেওয়াটা জরুরি।’ তিনি বলেন, এমন অনেক অভিভাবক আছেন, যারা তাদের শিশু-সন্তানদের শারীরিকভাবে ন্যূনতম প্রয়োজনীয় অথবা তিন ঘণ্টা সক্রিয় রাখার ব্যাপারে সচেতন নন। আবার কেউ কেউ হয়তো এতটাই ব্যস্ত যে এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার মতো সুযোগই পান না।
ডেভিস বলেন, ‘আমরা যা বলছি, তা সবই আপনাদের শিশুসন্তানের ভালোর জন্য। তাদের শৈশব ও কৈশোর এবং মাঝ বয়স ও পরবর্তী জীবনের কল্যাণের জন্য।’
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুই থেকে ১৫ বছর বয়সী মাত্র ৩০ শতাংশ শিশু প্রয়োজনমাফিক শরীরচর্চা করে।
স্কুলে ভর্তি হয়নি, যুক্তরাজ্যের এমন বেশির ভাগ শিশুর দিনে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সক্রিয় থাকার প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে খুঁটি বাওয়া, সাইকেল চালানো, দৌড়াদৌড়ি, খেলাধুলা, সাঁতার কাটা অথবা লাফালাফি করা।
সরকারি পরামর্শকে স্বাগত জানিয়েছেন রয়াল কলেজ অব পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক টেরেন্স স্টিফেনসন। তবে চিলড্রেনস সোসাইটি ক্যাম্পেইন ফর চাইল্ডহুডের পরিচালক এলাইন হিন্ডাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের ব্যয়সংকোচন নীতির ফলে সন্তানকে যথার্থ শরীরচর্চা করানোর মতো সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন বাবা-মায়েরা। বিবিসি।
প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment