বইটির লেখক সব্যসাচী ভট্টাচার্য তাঁর রবীন্দ্রনাথ টেগোর: অ্যান ইন্টারপ্রিটেশন শীর্ষক বইয়ে লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ ১৯১৪ সালে সবচেয়ে বেশি বিষণ্নতায় ভোগেন। এর আগের বছর তিনি প্রথম অ-ইউরোপীয় হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
নতুন জীবনীতে লেখা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথকে প্রায়ই ‘বাংলার শেক্সপিয়ার’ বলা হতো। তিনি প্রচুর কবিতা ও গল্প লিখেছেন। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জাতীয় সংগীত তাঁর লেখা। বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্যে নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ১৯১৪ সালে কয়েক দফা বিষণ্নতায় ভোগেন।
সব্যসাচী লিখেছেন, ‘১৯১৫ সালের জানুয়ারি মাসে রবীন্দ্রনাথ আবার তাঁর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথা বলেছেন। বলেন গভীর বিষণ্নতায় নিমগ্ন থাকার কথা। ফেব্রুয়ারিতে মানসিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার কথা দাবি করেন তিনি। ওই সময় উত্তরবঙ্গে পদ্মার তীরবর্তী এলাকায় নৌকায় করে ঘুরে বেড়ান তিনি।
সব্যসাচী লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ শৈশব থেকে নিঃসঙ্গতার সঙ্গে লড়ে বড় হয়েছেন। এর প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ঘনিষ্ঠজনের কাছে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠি। এতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘আমি খুব নিঃসঙ্গ ছিলাম—আমার শৈশবের মূল চিত্র এটাই—খুবই নিঃসঙ্গ ছিলাম। বাবার দেখা পেতাম কালেভদ্রে। অনেক দূরের মানুষ ছিলেন তিনি। মা মারা যাওয়ার পর বাড়ির গৃহকর্মীদের তত্ত্বাবধানে চলে যাই।’
জীবনীতে লেখা হয়েছে, আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা না পাওয়ায় যে হতাশা সৃষ্টি হয়, তা থেকেই নিঃসঙ্গতা বোধ করতেন রবীন্দ্রনাথ।
বন্ধুকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে সব্যসাচী লিখেছেন, মাঝেমধ্যে এমন সময়ও গেছে, রবীন্দ্রনাথ বেশ কয়েক মাস নিঃসঙ্গ থেকেছেন।
১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, তাঁর পুরস্কারপ্রাপ্তিতে দেশের মানুষ যে উৎসব করেছে, তা ‘ক্ষণিকের ঘটনা’; কারণ তিনি অনুভব করেছেন খুব কমসংখ্যক মানুষ তাঁর কাজের প্রশংসা করেছে।
সব্যসাচী বলেছেন, ১৯০৫ সালে নিঃসঙ্গ থাকার সময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর অন্যতম সেরা গান ‘একলা চল রে’ লিখেছেন। বিবিসি। প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment