কনের সাজ মানেই এখন বিয়ের পরিপূর্ণ সাজ। শাড়ি, গয়না, মেকআপ—সবকিছুতেই এখন তাই সামঞ্জস্য থাকা চাই। সে ক্ষেত্রে জমকালো নয়, বরং সাদামাটা অথচ অভিজাত ভাবটাই এখন চলছে বেশ। বিয়ের দিন সাজা তো হবেই। কিন্তু সাজপোশাক যেন কনের স্বাভাবিক লাবণ্যকে না আড়াল করে ফেলে।
দেশি শাড়িতে বাজিমাত
‘আমাদের দেশের কনেদের দেশীয় সাজেই বেশি ভালো লাগে। দেশীয় সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটবে এমন পোশাক এবং সাজের মিলনই চমৎকার লাগে।’ বলছিলেন ফ্যাশন হাউস অ্যান্ডেজের পরিচালক ও ডিজাইনার আনিলা হক।
বিয়ের দিনটিতে দেশীয় কাপড়ের শাড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকেই। জামদানি, সিল্ক অথবা মসলিনের শাড়িতে রুপালি অথবা সোনালি সুতার কাজ ফুটে ওঠে যেমন, দেখায়ও বেশ। একটু ট্রেন্ডি লুক আনতে চাইলে শাড়ির ওপরে জ্যাকেট পরতে পারেন।
ব্লাউজে অভিনবত্ব
শাড়ি পরার সব মজা নষ্ট হয়ে যায় যদি ব্লাউজ মনমতো না হয়। বিয়ের শাড়িটি যদি হালকা হয়, সে ক্ষেত্রে ব্লাউজে আনতে পারেন নতুনত্ব। ব্লাউজ বানানোর কিছু দরকারি পরামর্শ দিলেন আনিলা হক, ‘যাদের গড়নটা ভারীর দিকে, তাদের জন্য আদর্শ হলো লম্বা কামিজ কাটের ব্লাউজ। অন্যদিকে যারা হালকা গড়নের, তাদের জন্য কামিজ কাটের ব্লাউজের সঙ্গে লং জ্যাকেট ভিন্ন লুক তৈরি করবে।’ এ ছাড়া হাতায় কুচি ব্যবহার করতে পারেন। শীতের হাওয়া যাতে কাঁপন না ধরিয়ে দেয়, সে জন্য চাইলে লম্বা হাতাও পরতে পারেন। শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের রং যে হুবহু মিলতে হবে, তা-ও নয়; বরং শাড়ি ও ব্লাউজের রং বিপরীতও (কনট্রাস্ট) হতে পারে।
সাজও হালকা
কনের সাজ সম্পর্কে জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান। ‘শাড়ির কাজ যদি হালকা হয়, তাহলে সাজেও রাখুন তার সঙ্গে সামঞ্জস্য। এ সময় কনের সাজে গ্লিটার ব্যবহার না করাই ভালো। তার বদলে শিমার ব্যবহার করলে দেখতে ভালো লাগবে। চুল বাঁধার সময় সামনের অংশটুকু ব্যাক কোম্ব করে নিলে ভালো হয়। এতে মাথার ওড়না ও টিকলি সুন্দরভাবে বসানো যায়। আইশ্যাডো, ব্লাশ-অন, লিপস্টিকের রং
নির্ভর করবে শাড়ির রঙের ওপর।’
কনের গয়নার বেলায়ও এখন একই কথা সাজে। স্বর্ণের ভারী গয়নাই যে কনের গায়ে শোভা পেতে হবে, তা নয়; বরং অর্নামেন্টাল বিভিন্ন নকশার গয়না এখন অনেকেরই পছন্দের তালিকায়। মুক্তার সেট অথবা হালকা বা ভারী বাহারি গয়নাই এখন শোভা পায় কনের গলার মালায়, কানের দুলে অথবা মাথার টিকলিতে। এসব গয়নার উপকরণ হতে পারে সোনার প্রলেপ দেওয়া অন্য কোনো ধাতু বা রুপা। এ গয়নাগুলো দামে কম এবং যেমন খুশি নকশাও করা যায় অল্প সময়ের মধ্যে। এ ছাড়া রুপার ওপর পছন্দমতো সোনালি বা রুপালি প্রলেপ লাগিয়ে পাথর বসিয়ে নেওয়া যায়।
শাড়ির সঙ্গে একটি বা দুটি সেট পরাই এখনকার চল।
নতুনত্ব বরমালাতেও
স্পিকিং রোজেসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা কুমকুম হাসান বলেন, ‘বরমালায় গোলাপ ও রজনীগন্ধার আবেদন সব সময়ই থাকবে। তবে কিছুটা নতুনত্ব আনা যেতেই পারে বরমালার চিরাচরিত নকশাগুলোর পাশাপাশি। অর্কিড সে ক্ষেত্রে চমৎকার ভূমিকা রাখতে পারে।
বিয়ের পোশাকের সৌন্দর্য তুলে ধরার জন্য বরমালা হওয়া উচিত হালকা নকশার। এতে পোশাক ও মালার মধ্যে সামঞ্জস্য আসবে।’ বিয়ের পোশাকের রং যেটা হবে, ফুলগুলো তার বিপরীত রঙের হলে দেখতে ভালো লাগবে। যে ফুলগুলো একটু ফ্ল্যাট অথবা বসে থাকবে সুন্দর করে, মালা তৈরিতে সেগুলো ব্যবহার করা
যেতে পারে।
নকশার এ আয়োজনে মডেল হয়েছেন রাকা ও রুমা।
সাজ: কানিজ আলমাস খান
পোশাক: অ্যান্ডেজ
গয়না: অ্যারাবিয়ানস
মঞ্চসাজ: ওয়েডিং ডায়েরি
0 comments:
Post a Comment