এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে ইউরোপ থেকে সব ধরনের সবজির আমদানি নিষিদ্ধ করেছে রাশিয়া। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) অভিযোগ করেছে, রাশিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউরোপ থেকে সবজির আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে দেখা দিচ্ছে হিমোলাইটিক ইউরিমিক সিনড্রোম (এইচইউএস)। আক্রান্ত দুই হাজার রোগীর মধ্যে অন্তত ৫০০ জন এই সমস্যায় ভুগছে।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের চিকিৎসক রবার্ট টক্স প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জার্মানির স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি বলেন, এটাই সম্ভবত বিশ্বে ই. কোলাইয়ের সর্বোচ্চ বিস্তার ও ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণের ঘটনা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে রবার্ট টক্স বলেন, ‘এর বিস্তার কীভাবে রোধ করা যায়, তা এখনো অস্পষ্ট। অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই নতুন প্রজাতটিকে প্রতিরোধ করার কোনো নজিরও পাওয়া যায়নি।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মুখপাত্র গ্রেগরি হার্টল গত বৃহস্পতিবার বলেন, জার্মানি থেকে এর বিস্তার ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ই. কোলাইয়ের এমন ভয়াবহ বিস্তার আর কখনোই ঘটেনি।
জার্মানির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ প্রতিষ্ঠান রবার্ট কখ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ক্লস স্টার্ক জেডডিএফ টেলিভিশনে বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমরা মহামারি নিয়ে বলছি। জার্মানিতে এর আগে ই. কোলাইয়ের বিস্তার কখনো এমন পর্যায়ে পৌঁছায়নি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গবেষণার ফল থেকে ধারণা করা হচ্ছে, জার্মানির কোনো এক জায়গা থেকে এই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, অন্য দেশের সেই নাগরিকেরা এই সংক্রমণের শিকার হয়েছে, যারা সম্প্রতি জার্মানি সফর করেছে।
ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে এ পর্যন্ত মৃত ১৮ জনের মধ্যে ১৭ জনই জার্মানিতে মারা গেছে। অন্য জনের মৃত্যু হয়েছে সুইডেনে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা তিনজন অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তারাও ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি ওই তিন ব্যক্তি জার্মানি সফর করে।
জার্মানির কিছু কর্মকর্তা ঘোষণা দিয়েছিলেন, স্পেন থেকে আমদানি করা শসার মাধ্যমে জার্মানিতে ই. কোলাইয়ের বিস্তার ঘটেছে। বলা হচ্ছে, শতভাগ নিশ্চিত না হয়েই তাঁরা একথা বলেন। এতে স্পেনের সবজির ব্যবসায় ধস নেমেছে। এ ঘটনায় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী হোসে লুই রদ্রিগুয়েজ জাপাতেরো জার্মানির কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করবেন বলে জানান। গত বৃহস্পতিবার রদ্রিগুয়েজ বলেন, তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, স্পেনের কোনো খাবারে ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া নেই। ঘটনার জন্য জার্মানি অবশ্য স্পেনের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।
0 comments:
Post a Comment