সুসম্পর্কে আয়ু বৃদ্ধি

কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে ভালো আচরণ আপনার আয়ু বাড়িয়ে দেবে। এ ক্ষেত্রে যাদের সামাজিক সমর্থন এবং সম্পর্ক আশানুরূপ নয় তাদের আয়ুষ্কাল অন্যদের চেয়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ কম। কুড়ি বছর ধরে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর গবেষণা চালিয়ে এসব তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। বিভিন্ন অফিসের ৮২০ নারী-পুরুষের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। যাদের বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে এবং যারা দিনে অন্তত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা কাজ করেন। যারা সমাজের বিভিন্ন স্তরকে প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের মানসিক ব্যবহার এবং শারীরিক ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় আনা হয়।

এছাড়াও যারা বিষণ্নতায় ভোগেন, ধূমপানে অভ্যাস আছে, শারীরিকভাবে স্থূল তাদের গবেষণায় বিশেষ বিবেচনায় আনা হয়। সবার কাজের বা পেশাগত অভিজ্ঞতা যেন এক রকম না হয় সে বিষয়টিও গবেষকরা সচেতনতার সঙ্গে গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশেষ করে সমাজের বিভিন্ন ধরনের পেশাজীবী যেমন_ চিকিৎসক, অর্থ এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কর্মক্ষেত্রে বস, সিনিয়র ও জুনিয়র সহকর্মীদের সঙ্গে তাদের গুণগত, বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্বাভাবিক সম্পর্কের ধরন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।

এ কুড়ি বছরের গবেষণা চলাকালে যারা মারা গেছেন তাদের সামাজিক ও কর্মক্ষেত্রে সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। কাজ করতে হয় এমন যে কোনো সামাজিক স্তরে এসে যারা অন্য সহকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের মৃত্যু আশঙ্কা ১৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপার্টমেন্ট অব অর্গানাইজেশন বিহ্যাবিয়ারের অধ্যাপক ড. শ্যারন টোকের বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে আমরা অতিরিক্ত সময় ব্যয় করি। সপ্তাহান্তে আমরা আমাদের বল্পুব্দ-আত্মীয়দের সঙ্গে মিলিত হতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বা একেবারেই ভালো সম্পর্ক না থাকায় মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কর্মক্ষেত্রে সৌহার্দ্যপূর্ণ, সহজ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কর্মউদ্দীপনা, প্রাণচাঞ্চল্য বাড়িয়ে দেয়। এ ধরনের আবেগের সমর্থন সহকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়াটা জরুরি বলে গবেষকরা মনে করেন। সামাজিক ও কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক সম্পর্ক বিষণ্নতা বাড়িয়ে দেয়। কর্মউদ্দীপনা হ্রাস পায়। মানসিক উদ্বেগ ও অশান্তি থেকে রক্তচাপ বৃদ্ধি এমনকি হৃদরোগ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে বা বাইরে সামাজিক সম্পর্ক বা মেলামেশার জন্য ক্লাব, কফি হাউস বা রেস্তোরাঁয় যাওয়াটা আবশ্যক। এতে একে অন্যের সঙ্গে মতবিনিময়, ভাব আদান-প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থা বাড়ে। সৃষ্টি হয় উদ্দীপনা। হতাশা এবং একঘেয়েমি দূর হয়। এভাবে মানুষের আয়ুষ্কাল বেড়ে যায়। দ্য মেইল। 

সমকাল