নোয়াখালীর সুন্দলপুর ক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর জানিয়েছেন, এই ক্ষেত্রের একটি কূপ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
শনিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “পর্যায়ক্রমে সরবরাহ বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত করা হবে।”
পেট্রোবাংলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স দীর্ঘ ১৫ বছর পর নতুন একটি ক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে হোসেন মনসুর বলেন, “এটি একটি বড় অর্জন।”
তিনি জানান, গ্রিডে যোগ হওয়া নতুন গ্যাস চট্টগ্রাম অঞ্চলে দেওয়া হবে, যা শিল্পকারখানাসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগবে।
দেশে বর্তমানে দৈনিক ২৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে ২০০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন হচ্ছে। সেই হিসেবে ৫০ কোটি ঘনফুট ঘাটতি থাকছে।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহজাদপুর গ্রামে সাড়ে তিন একর জমিতে নতুন এ ক্ষেত্রে অনুসন্ধান কূপ খনন শুরু হয়। এর আট মাস পর ১৭ অগাস্ট শুরু হয় পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন।
এ ক্ষেত্রে ভূ-পৃষ্ঠের ১ হাজার ৪০০ মিটার নিচে গ্যাস পেয়েছে বাপেক্ষ। এর আগে দেশে এতো কম গভীরতায় আর কোথাও উত্তোলনযোগ্য গ্যাস পাওয়া যায়নি। হবিগঞ্জ ক্ষেত্রে গ্যাস পাওয়াস গেছে ভূ-পৃষ্ঠের ১ হাজার ৫০০ মিটার নিচে।
সুন্দলপুর ক্ষেত্র নিয়ে দেশে মোট গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা এখন ২৪টি। নতুন কূপ থেকে উৎপাদন শুরু হওয়ায় চালু কূপের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২টিতে।
‘সুন্দলপুর তেল, গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন’ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুন্দলপুর গ্যাস ক্ষেত্রে আনুমানিক ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাস মজুদ রয়েছে। কূপটি একটি চ্যানেলের মধ্যে পড়েছে। এখানে আরেকটি কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সেখানে মজুদ গ্যাসের পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে।”
সুন্দলপুরসহ এ পর্যন্ত মোট তিনটি ক্ষেত্রে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাপেক্স। ১৯৯৫ সালে ভোলার শাহবাজপুরে প্রথম এবং ১৯৯৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সালদায় গ্যাস পায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া ২০০৪ সালে কুমিল্লার শ্রীকাইলে গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সেখানে গ্যাস মেলেনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/
0 comments:
Post a Comment