দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া এলাকার বেসরকারি আমরি হাসপাতালে আজ শুক্রবার ভোরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩। কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বরাত দিয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল জানায়, নিহতদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি আছেন। তাঁর নাম গৌরাঙ্গ মণ্ডল। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
এদিকে, যথাযথ অগ্নিনিরোধক ও জরুরি উদ্ধার ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দমকল দপ্তরের মামলার পর হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। কলকাতার পত্রিকা আনন্দবাজার অনলাইন জানায়, হাসপাতালের কর্ণধার এস কে তোদি ও আর এস গোয়েঙ্কা আত্মসমর্পণ করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
দমকল দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ভোর চারটার দিকে আমরি হাসপাতালের বেজমেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর পুরো হাসপাতাল ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। হাসপাতালের আইসিসিইউ ও আইটিইউতে ভর্তি রোগীদের অধিকাংশই আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।
উদ্ধারকর্মীরা জানান, নিহতদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের চাচা ও হাসপাতালের তিনজন কর্মী রয়েছেন।
এদিকে, দমকল দপ্তর আমরি হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যথাযথ অগ্নিনিরোধক ও জরুরি উদ্ধার ব্যবস্থা ছিল না।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমরি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যথাযথ তদন্তের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কর্মকর্তারা জানান, দমকল বাহিনীর ২৫টি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় কাউন্সিলর চৈতালি চ্যাটার্জি বলেন, ‘আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। কিছু মানুষ এখনো ভেতরে আটকে আছেন।’
জানা গেছে, হাসপাতালের বেজমেন্টে অনেক দাহ্য পদার্থ মজুদ ছিল। শর্টসার্কিটের ফলে সেখানে আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, অগ্নিকাণ্ডের সময় হাসপাতালে প্রায় ১৬০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। বাকিদের অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের কর্মীরা হাসপাতালের ভেতরে আটকে পড়া রোগী, চিকিত্সক ও নার্সদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। উদ্ধারকর্মীরা জানান, আগুনে দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহতদের অন্যান্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোগীদের উদ্বিগ্ন স্বজনের কারণে উদ্ধার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment