স্বপ্নে যাবে শেখা

কারো স্বপ্নের মধ্যে হানা দিয়ে তার মাথায় কোনো একটি চিন্তা ঢুকিয়ে দেওয়া_এমন ভয়ংকর রকমের উত্তেজনাপূর্ণ সব ব্যাপার নিয়ে নির্মিত হলিউডি চলচ্চিত্র ‘ইনসেপশন’ সাড়া জাগিয়েছে বিশ্বজুড়ে। ফিকশন বা সায়েন্সফিকশনধর্মী চলচ্চিত্রের এমন অনেক বিষয় ও ধারণাই পরে বিজ্ঞানের কল্যাণে বাস্তবে রূপ নেয়। তবে খোদ বিজ্ঞান বলছে, স্যুররিয়ালিস্টিক এ ছবির ধারণার অনেককিছুই বাস্তবে সম্ভব নয়। আবার এর কিছু বিষয় বাস্তবে নিয়ে আসা সম্ভবও বটে। যেমন_ঘুমের মধ্যে কোনো কিছু শেখা। মানুষ ঘুমের সময় স্বপ্ন দেখবে, আর সে স্বপ্নের মাধ্যমে শিখে নেবে অনেক কিছুই। বিজ্ঞান বলছে, এটি সম্ভব।

যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, কোনো কোনো মানুষ আছে যারা ‘লুসিড ড্রিমার’। এর মানে হলো তারা স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নের বিষয়বস্তু বা স্বপ্নে কী ও তা কিভাবে দেখা হবে_এর ওপর তাদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকে। এ বিষয়টিই কাজে লাগিয়ে স্বপ্নের মধ্যে শিক্ষণের একটি ব্যাপার সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। এ জন্য স্বপ্নের মধ্যে বিভিন্ন ঘটনা পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত উপায়ে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুমের সময়ও মস্তিষ্কের শিক্ষণ সম্পর্কিত অঞ্চলটি সজাগ রাখার ক্ষমতাকে এ জন্য ব্যবহার করা সম্ভব বলে গবেষকদের বিশ্বাস।

গবেষকদলের সদস্য পিটার মরগান জানিয়েছেন, লুসিড ড্রিমাররা নিজেদের স্বপ্নের নিয়ন্ত্রণকারী। এ ছাড়া মস্তিষ্কের যে অংশটি কোনো কিছু শেখার কাজটি করে, ঘুমের মধ্যে তারা সেই অংশটিকে সচেতন রাখতে পারে। তাদের এ ক্ষমতাকে অন্যভাবে কাজে লাগানো সম্ভব। গবেষণায় দেখা গেছে, লুসিড ড্রিমাররা সামাজিকতা রক্ষাসহ জটিল ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো বিভিন্ন কাজে অন্যদের চেয়ে ভালো করে। তাই মানুষের এ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারলে স্বপ্নের মধ্যেও মানুষকে কোনো কিছু শেখানো সম্ভব।

উল্লেখ্য, এর আগে বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, যারা ঘুমের সময় স্বপ্নের মধ্যে কাপে কয়েন ছুড়ে ফেলার চর্চা করেছে, তারা পরদিন ঘুম থেকে উঠে সত্যি সত্যি ওই কাজটিতে অন্যদের চেয়ে অনেক ভালো করেছে।

সূত্র : দ্য ডেইলি মেইল অনলাইন।

কালের কন্ঠ