জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ: ২০১১ সালের সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের তালিকার শীর্ষস্থানে থাকা মানুষটির নাম জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। বিশ্বের সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। বিশ্বের তাবৎ প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ভিত্তিমূলকে নাড়িয়ে দিয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। লাখ লাখ মার্কিন গোপন কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করার মতো সাহস দেখিয়ে তিনি সাংবাদিকতায় একটি বৈপ্লবিক যুগের সূচনা করেছেন। ২০১০ সালে প্রথম আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন। তিনি দেখিয়েছেন, গণমাধ্যমের মধ্যদিয়ে বিশ্ব পরিবর্তনের গণজোয়ার ও গণজাগরণ আনা সম্ভব। সারা বিশ্বের কুচক্রী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একাই লড়াই চালিয়েছেন। একদিকে তিনি পেয়েছেন সাধারণ মানুষের ভালবাসা, অন্যদিকে ঘৃণার পাত্র হয়েছেন রাজনীতিকদের কাছে। অ্যাসাঞ্জের ভয়ে গুটিয়ে থাকা রাজনীতিকরা তার গতিকে রুখতে ঘৃণ্য চক্রান্ত এঁটে তার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর অভিযোগ আনলেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
আরনল্ড শোয়ার্জনেগার: অ্যাসাঞ্জের পরের অবস্থানেই রয়েছেন টার্মিনেটর-খ্যাত আরনল্ড শোয়ার্জনেগার। হলিউড ও বিশ্বের জনপ্রিয় অভিনেতা সিনেমার পর্দার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। লৌহমানব এ ব্যক্তিত্ব পরপর দু’বার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু যার এত প্রাপ্তি, তিনিও কলুষিত হলেন বিতর্কের জালে জড়িয়ে। ভেঙে দিলেন বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাইঝি মারিয়া শ্রিভারের সঙ্গে ২৫ বছরের সুখী দাম্পত্য জীবনের উপহার ৪ সন্তান। কিন্তু হঠাৎ থলের বিড়াল বাইরে বেরিয়ে এলো। গৃহপরিচারিকা মিল্ড্রেড প্যাট্রিসিয়া বায়েনার সঙ্গে তার অবৈধ যৌন সম্পর্কের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে গেল। তাদের সে সম্পর্কের ফসল ১৪ বছরের এক পুত্র সন্তান। এর পরই একে একে ৬টিরও বেশি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়। ৪ সন্তানকে নিয়ে বিভ্রান্ত মারিয়া বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন।
সিলভিও বেরলুসকোনি: ফোর্বস ম্যাগাজিনের জরিপে ২০১০ সালে ইতালির সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা দেশটির প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনি বিশ্বের সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের তালিকাতেও তৃতীয়। ৭৫ বছর বয়সেও বেরলুসকোনি যে তরুণদেরও হার মানাবেন- তা তার যৌন কেলেঙ্কারির পরিসংখ্যানই বলে দেয়। বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো সারা বছরই বেশ ব্যস্ত ছিল বেরলুসকোনিকে নিয়ে। ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর, একটি ইউটিউব ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি একজন নারী পুলিশের পিছনে দাঁড়িয়ে অশালীন ইঙ্গিত করছেন। সাবেক এক কলগার্ল নাদিয়া ম্যাক্সি বেরলুসকোনির সেক্স পার্টির গোপন তথ্য ফাঁস করলেন। নৈশভোজের পর তিনি কিভাবে নির্বাচিত তরুণীদের সঙ্গে গ্রুপ সেক্সে অংশ নেন তার বর্ণনা দেন তিনি। সমপ্রতি তার বিরুদ্ধে ১৭ বছরের এক যৌনকর্মী কারিমা এল মাহরুগকে সেক্সের বিনিময়ে টাকা প্রদানের অভিযোগের তদন্ত চলছে।
লেডি গ্যাগা: পপ সম্রাজ্ঞী হিসেবেই পরিচিত লেডি গ্যাগা। ফ্যাশন সচেতন ও সুর সম্পর্কে নিজস্ব স্টাইলের অধিকারী গ্যাগা সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কারগুলোতে ভূষিত হয়েছেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে ১৬ ইঞ্চি উঁচু হিলের জুতা পরে সাক্ষাৎ ও পুরস্কার বিতরণী উৎসবে তার পোশাকের বিচিত্র খেয়াল, ভক্তদের নজর এড়ায়নি। সমপ্রতি নতুন এক বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, গ্যাগা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেক্স পরিবর্তন করিয়েছেন।
বীণা মালিক: পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ আসিফের সঙ্গে তার গোপন বিয়ের গুজব ও পাতানো খেলার ব্যাপারে বাজিকরদের সঙ্গে আসিফের সম্পর্ক আছে, এমন দাবি করে আলোচনায় উঠে আসেন বীণা মালিক। তাছাড়া টেলিভিশন-রিয়্যালিটি শো ‘বিগ বস ৪’-এ তার যৌন আবেদনময়ী নারী হিসেবে বিতর্কিত উপস্থিতি সবাইকে অবাক করে দেয়। এরপর তাকে রিয়্যালিটি শো ‘স্বয়ম্ভর’ দেখা যায়। হাতে একটি নগ্ন দেহের ট্যাটু এঁকে বিতর্কিত হন তিনি। সমপ্রতি বীণা মালিকের বিরুদ্ধে নগ্ন দেহে ছবি তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও তিনি তা বারবার অস্বীকার করেছেন। এদিকে হঠাৎ করে কিছুদিনের জন্য নিখোঁজ থেকে সবাইকে ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন পাকিস্তানের এই বিতর্কিত অভিনেত্রী।
ডমিনিক স্ট্রস কান: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক প্রধান ডমিনিক স্ট্রস কান (৬২) বছরের সবচেয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের তালিকায় ষষ্ঠ। সাফল্যের চূড়া থেকে একেবারে সমতল ভূমিতে আছড়ে পড়েছেন তিনিও। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে টপকে ইতালির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে পারতেন তিনি। কিন্তু নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলের এক নারী কর্মচারীর উপর যৌন হামলা চালানোর অভিযোগে তার সে সম্ভাবনাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিলো। ২০১১ সালের মে মাসে সফিটেল হোটেলের নারী কর্মচারী দিয়াল্লোকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধানের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। এর পরপরই একে একে আরও যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয় কানের বিরুদ্ধে।
কিম কারাদাশিয়ান: ২০১১ সালে হলিউড সেলিব্রেটি, সমাজকর্মী ও মডেল কিম কারাদাশিয়ান বুঝিয়ে দিলেন কিভাবে অল্প সময়ে বহু অর্থের মালিক হওয়া যায়। একের পর এক বিতর্কের জন্ম দিলেন। গায়ক রেই জে-এর সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কের টেপ সাড়া ফেললো সারা বিশ্বে। হলিউডের সবচেয়ে দামি তারকাদের মধ্যে অন্যতম কিম। যেখানেই যেতেন, যাই করতেন, তার মূল লক্ষ্য ছিল টাকা উপার্জন। তা হোক সেক্স বা বিবাহিত সম্পর্ক। বাস্কেটবল তারকা ক্রিস হামফ্রিজও কিমের জালে জড়িয়ে কিমকে বিয়ে করলেন। বহু অর্থ খরচ করলেন বিয়ে ও কিমের পিছনে। কিন্তু ফল। ৭২ দিনের মাথায় বিয়ে বিচ্ছেদ। ধারণা করা হয়, ওই বিয়ে থেকে কিম লাখ লাখ ডলার কামিয়েছিলেন।
চার্লি শিন: সুন্দরী তরুণীদেরকে নিজের আয়ত্তে আনতে সিদ্ধহস্ত অভিনেতা চার্লি শিনের জুড়ি মেলা ভার। এর আগেই মাদক সেবনের অভিযোগেও অভিযুক্ত হয়েছেন বহুবার। এ বছরের জানুয়ারিতে এক রাতে উচ্ছৃঙ্খল এক পার্টিতে অংশ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত কোকেন সেবন করে হাসপাতালে ভর্তি হলেন। ৩ বার বিয়ে করেছেন চার্লি। ৫ সন্তানের জনক। তা সত্ত্বেও নিজের এ অস্বাভাবিক জীবন যাপনকে আড়াল করেননি। সাবেক পর্নো সিনেমার তারকা অভিনেত্রীদের সঙ্গে ছাদের নিচে রাত যাপন করেছেন।
হিউ হেফনার: প্লে-বয়ের সঙ্গে জড়িত তারকারা সব সময়ই তাদের খামখেয়ালিপনা ও বিতর্কিত চলাফেরার জন্য সমালোচিত। কিন্তু ৮৫ বছরের সাবেক প্লে-বয় তারকা হিউ হেফনার তার অর্ধেক বা তার চেয়েও কম বয়সী আবেদনময়ী নারীদের সঙ্গে ডেট করে এক অন্য মাত্রা দিয়েছেন। দু’বার বিবাহিত হেফনার ২০ বছর বয়সী আবেদনময়ী ক্রিস্টাল হ্যারিসকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আগের ঘরের সন্তানরাও তাদের সঙ্গে থাকবে। হঠাৎ করেই বেঁকে বসলেন ক্রিস্টাল। এরপর থেকে একের পর এক নতুন অসংখ্য তরুণীর সঙ্গে ভাববিনিময় করে চলেছেন অদম্য হেফনার।
পুনম পান্ডে: বিশ্বের বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের তালিকার দশম স্থানে অবস্থান করে নিয়েছেন ভারতের পুনম পান্ডে। নিজেকে মডেল ও ক্রিকেটভক্ত দাবি করা পুনম বলেছিলেন, ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারত চ্যাম্পিয়ন হলে, তিনি নগ্ন হয়ে রাস্তায় দৌড়াবেন। কিন্তু ভারত যখন সত্যিই চ্যাম্পিয়ন হলো, তখন পুনমের ফোন ছিল বন্ধ। বর্তমানে বেশ খোলামেলা শরীরে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য বেশ বিতর্কিত পুনম। mzamin.com
0 comments:
Post a Comment