জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটির পর রোববার ঢাকার সৌদি আরব দূতাবাসে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে যান কর্মীরা। কয়েকটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানও তাদের কর্মীদের ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে যায়। কিন্তু দূতাবাস হাতে লেখা সব পাসপোর্ট ফেরত দেয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (এমআরপি) ছাড়া এখন থেকে বাংলাদেশিদের আর কোনো পাসপোর্ট গ্রহণ করা হবে না। ফলে বিপাকে পড়েন সৌদিগামী বাংলাদেশিরা।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘আগে থেকে কিছুই জানায়নি সৌদি আরব। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। কারণ, হাতে লেখা পাসপোর্টধারী অনেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়ে গেছে। অনেক ধরনের ফি-ও জমা দেওয়া হয়েছে। এখন দূতাবাস পাসপোর্ট জমা না নিলে এই শ্রমিকদের দুর্ভোগে পড়তে হবে। বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হওয়া দরকার। বিষয়টি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।
হঠাৎ করে হাতে লেখা পাসপোর্ট নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার কারণ জনতে ঢাকার সৌদি দূতাবাসে কয়েক দফায় যোগযোগ করা হলেও কেউ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, সৌদি আরব থেকে ঢাকার দূতাবাসকে হাতে লেখা পাসপোর্ট না নিতে বলা হয়েছে। দূতাবাস এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে।
বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বাজার সৌদি আরব। ১৯৯২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর গড়ে এক থেকে দেড় লাখ কর্মী দেশটিতে কাজ করতে যান। কিন্তু ২০০৯ সালের শুরু থেকে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়া প্রায়ই বন্ধ করে দেয় দেশটি। ২০০৯ সালে মাত্র ১৪ হাজার এবং গত বছর মাত্র সাত হাজার কর্মী সেখানে গেছেন। এ বছরের গত ১০ মাসে ১২ হাজার লোক দেশটিতে গেছেন।
সৌদি প্রবাসীদের অভিযোগ, শুধু জনশক্তি রপ্তানি কমানো নয়, সৌদি আরব বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজের অনুমতিপত্রও (আকামা) বদল করতে দিচ্ছে না। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছয় থেকে সাত লাখ কর্মীকে। প্রবাসীদের দাবি, বাংলাদেশ সরকার সৌদি আরবের সঙ্গে যথাযথ কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারছে না।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (বহির্গমন ও প্রটোকল) সেলিম রেজা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জেনেছি। সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
0 comments:
Post a Comment