সহকর্মী অনুযায়ী আয়ু

কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কটি কেমন-এর ওপর নির্ভর করে মানুষের আয়ু। কাজের পরিবেশ বেশ মধুর এবং সহকর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক সহযোগিতা ও হৃদ্যতায় পরিপূর্ণ থাকলে আয়ু বেড়ে যায়। আর যদি পরিবেশটি থাকে রীতিমতো অসামাজিক, যেখানে কারো প্রতি কারো কোনো সহানুভূতি, সমানুভূতি নেই_তবে ওই ধরনের পরিবেশে কাজ করা ব্যক্তিদের আয়ু বরং কমে যেতে থাকে। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে গবেষণার পর এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন।

ইসরায়েলের তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৮ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ গবেষণা পরিচালিত হয়। এতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের কাজের পরিবেশ গবেষণার আওতায় নেওয়া হয়। গবেষণার পর আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নারী-পুরুষ উভয়ের ওপর কাজের পরিবেশের প্রভাব দেখা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সহকর্মীদের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক থাকলে তা বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা কর্মীদের আয়ু বাড়াতে ভূমিকা রাখে। তবে এ সহযোগিতা বা সহমর্মিতা আসতে হবে একই বা সমান পদে কর্মরতদের মধ্যে। সিনিয়র বা একেবারেই উচ্চপদস্থ কারো কাছ থেকে এ ধরনের সহযোগিতা আয়ু বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখে না।

গবেষকরা জানিয়েছেন, পুরুষদের বেলায় কর্মক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্পণের মতো ব্যাপার আয়ু বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। তবে নারীদের ওপর এ ধরনের দায়িত্ব চাপিয়ে দেখা গেছে, তাদের বেলায় এসবের ভূমিকা একেবারেই উল্টো, অর্থাৎ এ ধরনের ক্ষমতা অর্পণ করা হলে সেটি বরং তাদের আয়ু কমিয়ে দেয়।
গবেষকদলের প্রধান ড. অ্যারি শিরোম জানিয়েছেন, তাঁরা গবেষণার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কাজের পরিবেশ ও নারী-পুরুষ উভয়ের ব্যাপারটিই অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন, সেটি করলেও কর্মক্ষেত্রে যে সময়ের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ পরিবর্তিত হয়, সেটি তারা এ গবেষণায় বিবেচনায় নেননি। তবু তিনি উল্লেখ করেন, এ গবেষণায় সেটি অন্তর্ভুক্ত না হলেও অন্যান্য গবেষণায় বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, কালের স্রোতে কর্মক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ, কর্তৃত্ব, কাজের চাপ তথা সার্বিক পরিবেশ এলে প্রায় অভিন্নই থেকে যায়।

সূত্র : দ্য ডেইলি মেইল অনলাইন।