শীতে শিশুর যেন ঠাণ্ডা না লাগে
গরম থেকে শীত আসতে আবহাওয়ারও কিছুটা পরিবর্তন হয়। আর আবহাওয়ার এ পরিবর্তনে শিশুর বিভিন্ন রোগবালাই হতে পারে। এর মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বর, হাঁচি, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, নিউমোনিয়া, ডাইরিয়ার মতো বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
শীতে তাপমাত্রার পরিবর্তনে শিশুরা সহজে মানিয়ে নিতে পারে না। এ ছাড়া বাড়তি কিছু সচেতনতার অভাবে শিশু রোগাক্রান্ত হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম-
–ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশুকে গরম পোশাক না পরালে।
–সকালে ঘুম থেকে তুলে ঠান্ডা বাতাসে নিয়ে গেলে।
–ঠান্ডা পানিতে হাত-মুখ ধোয়া কিংবা গোসল করালে।
–আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে।
–বাচ্চার হাত অপরিষ্কার থাকলে বাচ্চা সে হাত মুখে দেয়, যা ডাইরিয়া হওয়ার অন্যতম কারণ।
–প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসায় অবহেলা করলে এ থেকে বড় রোগ হতে পারে।
–দুর্বল শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খেতে না দিলেও শীতকালে কিছু অসুস্থ হতে পারে।
শীতে অবশ্যই শিশুর দিকে বাড়তি খেয়াল ও যত্ন নিতে হবে। কোনো কারণে আক্রান্ত হয়ে গেলে অবশ্যই চিকৎসকের পরামর্শ নিন। বিভিন্ন ছোট অসুখ যেমন-সর্দি, কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। এসব থেকে নিউমোনিয়া কিংবা এ রকম বড় রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই কোনোভাবেই শিশুর সামান্য অসুস্থতাকে অবহেলা করবেন না। সাধারণ সর্দি-কাশিতে শিশুকে চায়ের সঙ্গে লেবুর রস, তুলসী পাতার রস, আদা খাওয়ানো যেতে পারে।
পানি খাওয়ানোর সময় কুসুম গরম পানি খাওয়াতে পারেন। ডাইরিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ও স্যালাইন খাওয়ানো শুরু করান। আর অন্যান্য তরল খাবারও অব্যাহত রাখুন। এতে শিশুর পানিশূন্যতা হবে না, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। অসুস্থ শিশুর খাবার যেন পুষ্টিকর হয় সেদিকে নজর দিন। এ সময় সুষম খাবারের প্রতি জোর দিতে হবে। ছোট শিশুর ক্ষেত্রে মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করবেন না। শিশুটি যদি একটু বেশি অসুস্থ হয়, তাহলে দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, শিশুর ব্যাপারে ঝুঁকি গ্রহণ করা উচিত নয়।
শীতে আপনার কিছু বাড়তি সচেতনতায় সুস্থ থাকবে আপনার শিশুটি। যদি শীতের শুরুতেই কিছু বিষয় খেয়াল রাখেন, তাহলে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো অবস্থায় পড়তে হবে না আপনার শিশুকে। খেয়াল রাখুন এসব বিষয়ে-
–শিশুকে অবশ্যই ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখুন।
–শীতের সময় শিশুকে গরম পোশাক যেমন-টুপি, হাত ও পা মোজা, সোয়েটার পরিয়ে দিন।
–ঠান্ডা জাতীয় খাবার যেমন-ফ্রিজের পানি, আইসক্রিম, খাওয়া থেকে শিশুকে বিরত রাখুন।
–গোসল করার সময় কুসুম কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে এবং তা প্রতিদিন।
–শিশুর হাত-মুখ পরিষ্কার রাখুন।
–শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন।
–অসুস্থ শিশুকে অন্যদের সংস্পর্শে বেশি আসতে না দেওয়াই ভালো। কারণ, সংক্রমণের ভয় থাকে।
শীতে শিশুর রোগবালাই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। তবে বাড়তি সচেতনতা আর যত্ন নিলে শীতে আপনার শিশু যেমন সুস্থ থাকবে, তেমনি আপনিও থাকবেন বাড়তি চিন্তামুক্ত।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো,
0 comments:
Post a Comment