সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ”রমজান মাসে ফিট থাকুন”: পর্ব ১ ও পর্ব ২ পড়ার জন্য | কারণ এই দুইটি প্রকাশনা ই এখন পর্যন্ত সবচাইতে বেশি বার পঠিত|
কেন রোজায় ব্যায়াম করবেন ?
- সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে কাজ কর্ম তেমন হয় না বা করতে ইচ্ছা করে না | তাই দিনের বেলা শরীরের কোনো ক্যালরি খরচ হয় না | এর ফলে মেদ জমতে পারে বা ওজন বাড়তে পারে |
- অনেক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে ও কম কাজ কর্ম করার ফলে metabolism কমে যায় | ব্যায়ামই পারে metabolism বাড়াতে | metabolism কমে গেলে ওজন বেড়ে যায় |
- সারাদিন রোজা রেখে ভাজা পোড়া ও গুরুপাক খাবার খাবার ফলে ও অনেকের ওজন বেড়ে যায় | ব্যায়াম ও balanced diet ঠিক মত করলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না |
- ব্যায়াম করার ফলে ফ্যাট বার্ন হয় | তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে বা কমে |
- যাদের ওজন বেশি তাদের এই রোজায় ব্যায়াম ও balanced diet এর মাধ্যমে ওজন কমাবার এক অপূর্ব সুযোগ |
- ব্যায়াম ছেড়ে দিলে ওজন বেড়ে যাবে , শরীর দুর্বল হয়ে যাবে, muscle এর strength কমে যাবে, muscle এর shape নষ্ট হয়ে যাবে, আপনাকে flabby বা ফোলা ফোলা দেখাবে |
- রমজানে ভাজা পোড়া ও গুরুপাক খাবার ফলে, কাজ কর্ম কম করার ফলে সবচাইতে তাড়াতাড়ি বাড়ে পেট বা abdomen | কিন্তু যদি এর উল্টোটি করা হয়, তাহলে পেট বাড়বে না; অর্থাৎ ব্যায়াম ও পরিমিত সুষম খাবার এর মাধ্যমে পেট বাড়বে না এবং কমবে |
- যারা সৌন্দর্য্য সচেতন এবং সবসময় স্লিম থাকতে চান, তারা ব্যায়াম না ছেড়ে স্লিম ফিগার ধরে রাখতে পারেন |
- সর্বোপরি সুস্থ্য থাকার জন্যই রোজায় ব্যায়াম দরকার |ব্যায়াম এর মাধ্যমে শরীর থেকে toxin বের হয়ে যায় |
- তাছাড়া ব্যায়াম করার ফলে শারীরিক শক্তি বাড়ে তাই রোজা রাখতেও কষ্ট হয় না
কি ভাবে ব্যায়াম করবেন এবং কিছু ব্যায়াম এর নমুনা নিচে দেয়া হলো :
- আমি আগেই বলেছি রোজায় খাওয়া থেকে শুরু করে ব্যায়াম , জীবন যাত্রা সব ই হতে হবে নিয়ম মত , সাধারণ, এবং পরিমিত | Good time management বা সারাদিনে কখন কি কাজ করবেন তা আগে ই ঠিক করে নিলে রমজানে সুস্থ্য সুন্দর মন ও সু স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে |
- যার যার শারীরিক অবস্থা , ফিটনেস লেভেল ও আগের ব্যায়াম এর রুটিন অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে | কখন ব্যায়াম করবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করবে | ইফতার এর পরে, তারাবির পরে, সেহেরি র পরে , সকালে বা বিকালে যেকোনো সময় করতে পারেন | তবে খাবারঅন্ততঃ একঘন্টা পরে ব্যায়াম করবেন | আমি ইফতারের এক ঘন্টা পরে ব্যায়াম করতে সচ্ছন্দ বোধ করি |রোজা রেখে ব্যায়াম না করা ই ভালো | কারণ ব্যায়াম এর ফলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে glucose বের হয়ে যায় | তাই রোজা রেখে পানি খেতে না পারার ফলে মাথা ঘুরতে পারে বা অগ্জ্ঞান হয়ে যেতে পারেন |
- রোজার ব্যায়াম সাধারণত হালকা করাই ভালো | কারণ সারাদিন রোজা রেখে শরীর দুর্বল থাকে | দুর্বল শরীরে বেশি চাপ না দেয়াই ভালো |তাই যারা –৯০ মিনিটের ব্যায়াম করেন তারা কমিয়ে ৬০ মিনিট করতে পারেন | যারা ৬০ মিনিট করেন তারা ৩০-৪৫ মিনিট করতে পারেন |যারা ৩০ মিনিট করেন তারা ১৫-২০ মিনিট করতে পারেন |
- হালকা, মাঝারি , high intensity যে কোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন আপনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে | কার্ডিও, yoga, pilates, aerobics, weight training, circuit, swimming সব ধরনের ব্যায়াম ই রোজায় করতে পারেন |
- তবে প্রতিদিন ব্যায়াম দরকার নেই | সপ্তাহে দুই থেকে পাঁচ দিন করতে পারেন |একদিন পর পর ব্যায়াম করতে পারেন |
- ব্যায়াম করার সময়, আগে ও পরে প্রচুর পানি খাবেন |
- যারা বাইরে হাটেন অথবা বাসায় ট্রেড মিল এ হাটেন, তারা ইফতারের এক ঘন্টা পরে হাটাহাটি করতে পারেন | তবে সময় কমিয়ে দেয়া ই ভালো |যেমন: ৩০ মিনিট |ভরা পেটে কখনই ব্যায়াম করবেন না |
- যারা নিয়মিত জিম এ যান তারা অনেকেই রোজায় জিম এ যাওয়া বন্ধ করে দেন | এটা ঠিক না | ফলে রোজার পরে আবার জিম এ যাওয়া আলসেমি লাগতে পারে | জিম এ যাবার অভ্যাস ঠিক রাখলে সুস্থ্য থাকা যাবে | যেমন : জিম এ গিয়ে আগের রুটিন ঠিক রেখে প্রতিটি ব্যায়াম কম সময় ধরে করতে পারেন |
- আমি যেভাবে করি : জিমে গিয়ে ১০ মিনিট warm up করে , ১৫ মিনিট weight training (barbel, dumbbell, weight machine) করি | তারপর ৩০-৪৫ মিনিট aerobics বা spinning করি | সবশেষে cool down ও stretching করি |
- যারা বিভিন্ন্ ধরন এর ব্যায়াম করেন, যেমন: cardio, aerobics, spinning, yoga, swimming, weight training , stretching ইত্যাদি তারা সব ধরনের ব্যায়ামই করার অভ্যাস রাখতে চেষ্টা করুন |
- কার্ডিও এবং weight দুটাই করতে পারলে ভালো |
- পেট যেন না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখবেন সবসময় | পেট এর ব্যায়াম করুন নিয়মিত |
- যারা জিম এ যেতে চান না বা সম্ভব না, বা কার্ডিও করতে চান না , তারা বাড়িতে বা জিম এ power yoga করতে পারেন | তবে , যারা কখন ও এই ধরনের ব্যায়াম করেন নি তারা এটা না করা ই ভালো | এছাড়া ও শুধুমাত্র stretching অথবা power yoga অথবা weight training করেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও shape ঠিক রাখা সম্ভব |
- আমার আরেকটি প্রিয় ব্যায়াম হচ্ছে circuit training: এটি প্রতিটি muscle এর জন্য, না থেমে , কম সময়ে করা হয় | ফলে shaping বা toning হয় ও calorie খরচ বেশি হয় | রোজা য় circuit training করতে পারেন | তবে এটি ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট করাই ভালো |
- বডি বিল্ডার রা রোজায় আগের মতই muscle build করার ব্যায়াম অব্যাহত রাখবেন | দয়া করে ভাজা পোড়া খেয়ে ও পানি কম খেয়ে muscle নষ্ট করবেন না | আগের মতই বেশি বেশি প্রোটিন খাবেন |
- যারা toning করেন তারা আগের মতই করবেন, যাতে শেপ নষ্ট না হয় |
- এছাড়াও আমার quick 15 minutes cardio করতে পারেন |
- diabetes এর রোগী রা আগের মত ই নিয়মিত হাটবেন |
- এছাড়াও তারাবিহর নামাজ পড়তে যাবার আগে বা পরে হাটা হাটি করতে পারেন | তারাবিহর নামাজের মাধ্যমেও অনেক ব্যায়াম হয় | নামাজের মাধ্যমে পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গের ব্যায়াম হয় |
রমজানে ফিট থাকুন সিরিজ এখানেই শেষ করছি | কেমন লাগলো আমাকে জানাবেন |
সবার রোজার জীবন সুস্থ্য, সুন্দর ,আনন্দময় হোক এই দোয়া করি | Source fitnessbd.com
0 comments:
Post a Comment