আড্ডাবাজিও উপকারী!

মা-বাবা যতই অপছন্দ করুক, অভিভাবকরা যতই সময় নষ্টের অভিযোগ করুক_ডাক্তারদের গবেষণা কিন্তু আড্ডাবাজি শরীরের জন্য ভালো বলেই রায় দিচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, আড্ডাবাজিতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সাইকিয়াট্রি বিভাগের বিহ্যাভিয়ারাল সায়েন্সের একদল গবেষক সম্প্রতি আড্ডা নিয়ে গবেষণা করেছেন।

গবেষণায় যে সরাসরি আড্ডা উপকারী তা বলা হয়নি, তবে প্রকারান্তরে এটা উপকারী, সেটাই বলা হয়েছে। গবেষক

দলের একজন বলেছেন, আড্ডা-গল্পে একজন মানুষ অন্যদের খুব ভালো করে বুঝতে শেখে। এভাবে সে জেনে যায়, কে তার বন্ধু আর কে তার বন্ধু নয়। ফলে সে নিজেকে বন্ধুর আরো কাছে নিতে এবং শত্রু থেকে দূরে থাকতে শেখে। তার ভাবনার জগৎ পরিবর্তিত হয়। গবেষণাটি সায়েন্স জার্নালে ছাপা হয়েছে।

গবেষণায় বায়নোকুলার রাইভালরি থিওরি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি হচ্ছে, মনে মনে কাউকে শত্রু বা বন্ধু ভাবা এবং তার দিকে বাড়তি নজর দেওয়া। গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছে তাদের সঙ্গে কিছু মানুষের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে মানুষগুলোর অতীত রেকর্ড এমন_কেউ হয়তো বন্ধুর দিকে চেয়ার ছুড়ে মেরেছে, কেউ বৃদ্ধ মানুষকে রাস্তা পার হতে সাহায্য করেছে, কেউ হয়তো ভালো বা মন্দ তেমন কোনো কাজই করেনি।

দেখা গেছে, যাদের সম্পর্কে খারাপ রেকর্ড আছে বা ভালো কাজ না করার রেকর্ড আছে, গবেষণায় অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষ তাদের এড়িয়ে যেতে চাইছে। আড্ডা-গল্পের সময় তার সঙ্গে কথা বলতে বাড়তি সময় নিচ্ছে। হিসাব করে কথা বলছে। এমনকি তাকে বিশেষ দৃষ্টিতেও দেখছে।

এর কারণ হিসাবে গবেষকরা বলছেন, ব্রেইন একটা তথ্য পেলে তা তার জন্য কতখানি ভালো বা মন্দ সেটা, বিবেচনা করে। যে লোকগুলো সম্পর্কে নেগেটিভ বা বাজে কথা বলা হয়েছে, ব্রেইন আপনা-আপনি ওই লোক থেকে নিজেকে সতর্ক রাখছে। আচার-আচরণ সংবরণ করছে। যে লোকটি তার বন্ধুর দিকে চেয়ার ছুড়ে মেরেছে, সে হয়তো আপনাকে চেয়ার ছুড়ে মারবে না। কিন্তু ব্রেইন আপনাকে সতর্ক রাখছে_যাতে এমন ঘটনার শিকার না হতে হয়।

উপসংহারে গবেষকরা বলছেন, মানুষের সঙ্গে আড্ডা-গল্প করলে ব্রেইন বাড়তি কাজ করতে শেখে।