স্মৃতির মাঝেই সুখের চাবি!

সুখ নিয়ে যুগ যুগ ধরে পৃথিবীজুড়ে গবেষণা হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু আজও সুখের সর্বজন কোনো সংজ্ঞা দাঁড়ায়নি। তবে বিভিন্নভাবে সুখ নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, সুসময়কে স্মরণ স্মৃতিকাতরতা এবং কষ্টের বিষয়গুলোকে ভুলে থাকার চেষ্টা সুখের অন্যতম চাবিকাঠি। তাঁদের মতে, যেসব মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে অতীত নিয়ে ইতিবাচকতা ও স্মৃতিকাতরতা আছে তাঁদের জীবনে সন্তুষ্টির মাত্রা বেশি। সম্প্রতি এ গবেষণা সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘পার্সোনালিটি অ্যান্ড ইন্ডিভিজুয়াল ডিফারেন্সেস’ জার্নালে।

সুখবিষয়ক ওই গবেষণায় সানফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটির ৭৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন। তাঁদের পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল ব্যক্তি হিসেবে

তাঁরা কতটা বহির্মুখী, অনুভূতিসম্পন্ন মুক্তমনের বা খোলামেলা, বিবেকবান ও সম্মতচিত্ত। স্বেচ্ছাসেবীদের সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাঁদের বর্ণনার ইতিবাচকতা বা নেতিবাচকতা পর্যবেক্ষণ করা হয়। শেষে তাঁদের জীবনে সার্বিক সন্তুষ্টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ বিষয়গুলোর ভিত্তিতে একজন মানুষকে যাচাই করে তার ভিত্তিতে শ্রেণীবিন্যাস করে নম্বর দেওয়া হয়।

গবেষকদের মতে, বহির্মুখী তথা প্রাণচঞ্চল ও হাসি-খুশি মানুষের সুখবোধ তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়, যাঁরা তাঁদের সাফল্যের কথা অতিরঞ্জিত করে বা বাড়িয়ে বলেন অথবা ব্যর্থতা নিয়ে মনে মনে শুধু ভাবতেই থাকেন, তাঁদের তুলনায় স্মৃতিকাতর মানুষ বেশি সুখী। গবেষকদের মতে, অভিজ্ঞতার চেয়ে দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভাগ্যের ওপর বিশ্বাস সুখবোধের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে চরিত্র পরিবর্তন করার চেষ্টা না করে বরং কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে কোনো ব্যক্তি তাঁর সুখবোধের মাত্রায় পরিবর্তন আনতে পারেন।

এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটির লেখক ও সানফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক রয়ান হাওয়েল বলেন, বহির্মুখী মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশি সুখী এ কারণে যে তাঁরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। তাঁদের মধ্যে এক ধরনের স্মৃতিকাতরতা কাজ করে। অন্যদিকে যাঁদের মধ্যে অধিক মাত্রায় নেতিবাচক ধারণা ও হতাশা কাজ করে তাঁরা তুলনামূলকভাবে বেশি অসুখী। সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইন।