পান করুন পর্যাপ্ত পানি: গ্রীষ্মের গরমে ঘেমে ঘেমে কমে যায় শরীরের পানি। সেই সাথে কিছু খনিজ লবণ। পানির এ ঘাটতি পূরণ করতে পান করুন পর্যাপ্ত পানীয়। পানিশূণ্যতা প্রতিরোধের জন্যও পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। দৈনিক আট গ্লাস বা তার চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিৎ। পান করুন ততক্ষণ যতক্ষণ না তৃষ্ণা মিটে। আর তৃষ্ণা পেলেই পান করুন পানীয়। ঠান্ডা বিশুদ্ধ
গরম থেকে হিট স্ট্রোক:পর্যাপ্ত পানি পান না করলে বেশি গরমে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে হতে পারে হিট স্ট্রোক। জ্বর, ঘামহীন শুষ্ক ত্বক, শ্বাস প্রশ্বাসের হার বৃদ্ধি, হৃদস্পন্দনের হার বৃদ্ধি, বমি বমি ভাব, মাথা ব্যাথা, খিঁচুনি, এমন কি অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কাপড় চোপড় হোক আরামদায়ক: হালকা রঙের পাতলা সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা জামা কাপড় পরিধান করুন। কাপড়ের রং হালকা হলে তা বাইরের তাপ শোষণ করবে কম। পাতলা সুতি কাপড়ের ভেতর দিয়ে বায়ু চলাচল করতে পারবে বেশ। শরীরে গরম অনুভূত হবে কম, আরাম লাগবে বেশি।
বাইরে গেলে ভাবতে হবে: সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মির জন্য হতে পারে ত্বকের ক্যান্সার। ক্ষতি হতে পারে চোখেরও। রোদের হাত থেকে ত্বক ও চোখ বাঁচতে মাথায় ব্যবহার করুন ছাতা বা ক্যাপ। চোখে সান গ্লাস বা রোদ চশমা। আর গায়ে আরাম দায়ক জামাকাপড় তো থাকতেই হবে।
ঘাম থেকে ঘামাচি: আমাদের ত্বকে আছে অজস্র ঘর্মগ্রন্থি। এগুলো থেকে ঘাম বের হয়। ঘামের সাথে ত্বকের ময়লা যুক্ত হয়ে এই গ্রন্থিগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঘাম জমা হবে ভেতরে, আর গ্রন্থিগুলো ওঠবে ফুলে। হয়ে যাবে ঘামাচি। বেশি ঘামলে ঘামাচি হবার সম্ভাবনা বেশি। শিশুদের ঘর্মগ্রন্থিগুলো কম পরিপক্ক। ফলে তাদের ঘামাচি হবার সম্ভাবনা বড়দের চেয়ে বেশি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে বা সাবান দিয়ে নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে ঘামাচি হবে কম। পাতলা জামাকাপড় পরিধান করলে শরীর ঘামবে কম। তাতেও ঘামাচির আশঙ্কা কমবে।
গরমের ঠান্ডা লাগার ভয়: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা খুব বেশি কম হলে ঠান্ডা লাগতে পারে। ঠান্ডা লাগতে পারে ঘামের শরীরে গোসল করলেও। ঠান্ডা পানিতে গোসল আরামদায়ক। তবে গোসলের পূর্বে শরীরের ঘাম শুকাতে দিন।
রোগজীবাণু বাড়ে দ্রুত: গরম আবহাওয়ায় খাবার রেখে দিলে তাতে রোগজীবাণু বংশবৃদ্ধি করে দ্রুত। সুতরাং রান্না করা খাবার খেতে হবে গরম গরম। পরে খেতে চাইলে তা রেখে দিতে হবে ফ্রিজে। অন্যথায় ফুড পয়জনিং হয়ে হতে পারে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি।
বিশ্রাম নিন পরিমিত: ঘামে ক্লান্ত দুর্বল শরীর সকল পরিশ্রম না ও সইতে পারে। ব্যায়াম বা পরিশ্রম করুন সহনীয় পর্যায়ে। সেটাও সকালে বা বিকেলে। দুপুরের কড়া রোদে নয়। বিশ্রাম নিন পরিমিত।
ডাঃ মোঃ শহীদুল্লাহ্
ভিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ,
কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক
0 comments:
Post a Comment